মোবাইল সার্ভিসিং শিখুন আমাদের সাথে, আমরা সম্পুর্ণ কোর্স বিস্তারিত শিখাবো এই ওয়েব সাইটে। আমাদের সাথেই থাকুন। মোবাইল সার্ভিসিং শিখে নিজের ক্যারিয়ার তৈরী করুন।
১/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল (ডিজিটাল মাল্টিমিটার) Digital Multimiter.
ডিজিটাল মাল্টিমিটার একটি বৈদ্যুতিক যন্ত্র যা বৈদ্যুতিক মান যেমন ভোল্টেজ, কারেন্ট, এবং রেজিস্ট্যান্স মাপতে ব্যবহৃত হয়। এটি সহজে বৈদ্যুতিক সার্কিটের বিভিন্ন প্যারামিটার পরিমাপ করতে সক্ষম।
ডিজিটাল মাল্টিমিটারের অংশসমূহ
১. ডিসপ্লে: যেখানে পরিমাপের ফলাফল ডিজিটালভাবে দেখা যায়।
২. সিলেক্টর সুইচ: এটি দিয়ে বিভিন্ন ফাংশন যেমন ভোল্টেজ, কারেন্ট বা রেজিস্ট্যান্স নির্বাচন করা হয়।
৩. প্রোব (Probe): এটি মিটারের সাথে সংযুক্ত থাকে এবং পরিমাপের জন্য বৈদ্যুতিক সার্কিটে রাখা হয়। সাধারণত একটি কালো এবং একটি লাল প্রোব থাকে।
(কিভাবে কাজ করে)
ডিজিটাল মাল্টিমিটার একটি এডিসি (Analog-to-Digital Converter) এর সাহায্যে এনালগ সিগনালকে ডিজিটালে রূপান্তরিত করে এবং তা ডিসপ্লেতে দেখায়। আপনি যখন মিটারকে কোনো একটি ফাংশনে সেট করেন (যেমন ভোল্টেজ মাপার জন্য), এটি সংশ্লিষ্ট সিগনাল সংগ্রহ করে ও সেটিকে ডিজিটাল আকারে প্রদর্শন করে।
(ব্যবহারের নিয়ম)
১. ফাংশন নির্বাচন করুন: প্রথমে সিলেক্টর সুইচ দিয়ে মিটারের প্রয়োজনীয় ফাংশন (ভোল্টেজ, কারেন্ট, বা রেজিস্ট্যান্স) নির্বাচন করুন।
২. প্রোব কানেক্ট করুন: কালো প্রোব কমনের (COM) পোর্টে এবং লাল প্রোব ভোল্টেজ বা কারেন্ট মাপার জন্য নির্দিষ্ট পোর্টে সংযুক্ত করুন।
৩. পরিমাপ করুন: সার্কিটের নির্দিষ্ট অংশে প্রোবগুলো স্পর্শ করে মিটার পড়ুন।
(সতর্কতা)
(১. ভোল্টেজ এবং কারেন্ট মাপার সময় উচ্চ ভোল্টেজ এড়িয়ে চলুন। ২. রেজিস্ট্যান্স মাপার সময় নিশ্চিত করুন যে সার্কিটে পাওয়ার অফ রয়েছে।
৩. মিটার সঠিক সেটিংয়ে আছে কিনা যাচাই করে নিন।
ডিজিটাল মাল্টিমিটার সহজে ব্যবহারযোগ্য এবং অনেক মাপে নির্ভুল ফলাফল দেয়, যা বৈদ্যুতিক সার্কিটের ত্রুটি নির্ধারণে সহায়ক।)
২/ মোবাইল সার্ভিসিং টুল (এনালগ মাল্টিমিটার) Analogue Multimiter.
এনালগ মাল্টিমিটার একটি বৈদ্যুতিক যন্ত্র যা বৈদ্যুতিক মান যেমন ভোল্টেজ, কারেন্ট, এবং রেজিস্ট্যান্স মাপতে ব্যবহৃত হয়, তবে এটি ডিজিটাল মাল্টিমিটারের মতো ডিসপ্লেতে সংখ্যা দেখায় না। বরং এতে একটি স্কেল এবং সূচক (নিডল) থাকে, যা নির্দেশ করে বিভিন্ন মান। সাধারণত এটি ছোট-বড় বিভিন্ন মান পরিমাপ করতে পারে এবং সহজেই ভোল্টেজ, কারেন্ট, ও রেজিস্ট্যান্স মাপার কাজে ব্যবহৃত হয়।
(এনালগ মাল্টিমিটারের অংশসমূহ)
১. ডায়াল বা স্কেল: স্কেলে বিভিন্ন একক ও পরিমাপের ধাপ চিহ্নিত থাকে।
২. নিডল (সূচক): স্কেলের ওপর সূচক মুভ করে এবং পরিমাপের ফলাফল দেখায়।
৩. সিলেক্টর সুইচ: পরিমাপের ধরন (ভোল্টেজ, কারেন্ট, বা রেজিস্ট্যান্স) এবং পরিসীমা নির্বাচন করতে এটি ব্যবহৃত হয়।
৪. প্রোব (Probe): যেটা সার্কিটের সাথে সংযুক্ত করে বৈদ্যুতিক মান মাপা হয়।
(কিভাবে কাজ করে)
এনালগ মাল্টিমিটারে সাধারণত একটি গ্যালভানোমিটার থাকে, যা বর্তমানের প্রবাহের উপর নির্ভর করে সূচককে স্কেলে সরাতে সাহায্য করে। এটি এনালগ সিগনাল অনুযায়ী সূচককে স্কেলে নির্দেশ করতে সক্ষম। যখন মিটারকে একটি ফাংশনে সেট করা হয়, তখন এটি প্রবাহিত সিগনাল সংগ্রহ করে, এবং সূচক সেই মান অনুযায়ী স্থানান্তরিত হয়।
(ব্যবহারের নিয়ম)
১. ফাংশন এবং রেঞ্জ নির্বাচন করুন: প্রথমে সিলেক্টর সুইচ দিয়ে মাপার ধরন (ভোল্টেজ, কারেন্ট, বা রেজিস্ট্যান্স) এবং উপযুক্ত পরিসীমা নির্বাচন করুন।
২. প্রোব কানেক্ট করুন: কালো প্রোব কমনের (COM) পোর্টে এবং লাল প্রোব ভোল্টেজ বা কারেন্ট মাপার জন্য নির্দিষ্ট পোর্টে সংযুক্ত করুন।
৩. স্কেল পড়ুন: প্রোবগুলো সার্কিটে স্পর্শ করলে সূচক মুভ করবে। স্কেল থেকে সূচকের মান অনুযায়ী ফলাফল পড়ুন।
(সতর্কতা)
(১. রেঞ্জ সিলেক্ট করার সময় নিশ্চিত হন যেন মাপার মান সেটিংয়ের চেয়ে কম বা সমান হয়। ২. কারেন্ট এবং ভোল্টেজ মাপার সময় উচ্চ ভোল্টেজ এড়িয়ে চলুন। ৩. রেজিস্ট্যান্স মাপার সময় নিশ্চিত করুন যে সার্কিটটি পাওয়ার অফ রয়েছে।
এনালগ মাল্টিমিটার তুলনামূলকভাবে শক্তপোক্ত এবং সহজে বহনযোগ্য। তবে, ডিজিটালের তুলনায় এটি কিছুটা কম নির্ভুল এবং সূচক পড়া কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, বিশেষ করে যখন সূচক দুটি মানের মাঝখানে থাকে।)
৩/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল "হট এয়ার গান" Hot Air gun
হট এয়ারগান একটি বৈদ্যুতিক যন্ত্র যা গরম বাতাস তৈরি করে বিভিন্ন কাজের জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি দেখতে অনেকটা হেয়ার ড্রায়ারের মতো, তবে এটি অত্যন্ত গরম বাতাস (প্রায় ১০০°-৬০০° সেলসিয়াস পর্যন্ত) সৃষ্টি করতে সক্ষম। হট এয়ারগান সাধারণত ইলেকট্রনিক সার্কিট রিপেয়ারিং, পেইন্ট রিমুভাল, পাইপ বাঁকানো, এবং প্লাস্টিক শেপিং করার মতো কাজে ব্যবহৃত হয়।
হট এয়ারগানের অংশসমূহ
১. মোটর: যা বায়ু প্রবাহ সৃষ্টি করে।
২. হিটিং এলিমেন্ট: যা বৈদ্যুতিক শক্তিকে তাপে রূপান্তর করে এবং বায়ুকে গরম করে।
৩. তাপ নিয়ন্ত্রণ বোতাম: এটি দিয়ে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
৪. এয়ারফ্লো নিয়ন্ত্রণ: এটি বায়ুর গতি নিয়ন্ত্রণ করে।
কিভাবে কাজ করে
হট এয়ারগানে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হলে মোটর বায়ু প্রবাহিত করে এবং হিটিং এলিমেন্ট সেই বাতাসকে গরম করে। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ বোতামের সাহায্যে প্রয়োজন অনুযায়ী তাপমাত্রা বাড়ানো বা কমানো যায়। প্রয়োজনীয় তাপমাত্রায় সেট করার পর, গরম বাতাসটি নির্দিষ্ট এলাকায় প্রয়োগ করা হয়।
ব্যবহারের নিয়ম
১. সঠিক তাপমাত্রা সেট করুন: কাজের ধরন অনুযায়ী তাপমাত্রা সেট করুন। ইলেকট্রনিক কাজের জন্য কম তাপমাত্রা ব্যবহার করা ভালো, তবে পেইন্ট রিমুভাল বা পাইপ বাঁকানোর জন্য উচ্চ তাপমাত্রা প্রয়োজন হতে পারে।
২. সঠিক দূরত্ব বজায় রাখুন: সাধারণত সার্ফেস থেকে প্রায় ২-৪ ইঞ্চি দূরত্বে হট এয়ারগান ধরুন। কাছাকাছি ধরলে এটি ক্ষতি করতে পারে।
৩. আস্তে আস্তে সরান: গরম বাতাস একটি স্থানে দীর্ঘ সময় ধরে রাখবেন না; আস্তে আস্তে হট এয়ারগান মুভ করুন।
4. নিরাপত্তা সতর্কতা অনুসরণ করুন: সরাসরি ত্বকের দিকে লক্ষ্য করবেন না এবং কাজ শেষ করার পর গরম বাতাস বের হওয়া পর্যন্ত সেটিকে নাড়াচাড়া করবেন না।
সতর্কতা
(১. উচ্চ তাপমাত্রা হওয়ায় এটি ত্বকের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, তাই সাবধানে ব্যবহার করুন। ২. আগুন লাগার ঝুঁকি এড়াতে জ্বলনশীল পদার্থ থেকে দূরে রাখুন। ৩. কাজ শেষ করার পর সেটিকে কিছুক্ষণ ঠান্ডা হতে দিন।
সতর্কতার সাথে ব্যবহারের মাধ্যমে হট এয়ারগান বিভিন্ন মেরামতি এবং নির্মাণ কাজে সহায়ক হতে পারে।)
▶️ বিজ্ঞাপনের পর আরো পড়ুন ◀️
৪/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল "সোল্ডারিং আয়রন"
|
মোবাইল সার্ভিসিং টুল "সোল্ডারিং আয়রন" |
সোল্ডারিং আয়রন একটি জনপ্রিয় মোবাইল সার্ভিসিং টুল, যা ইলেকট্রনিক সার্কিট বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক্সের কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি মূলত ধাতুর দুটি অংশের মধ্যে সংযোগ তৈরি করতে সোল্ডার নামক এক ধরনের ধাতব পদার্থকে গলিয়ে একসাথে আটকানোর কাজ করে।
সোল্ডারিং আয়রন কিভাবে কাজ করে?
সোল্ডারিং আয়রনকে বৈদ্যুতিকভাবে গরম করা হয়, যা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় গরম হলে সোল্ডার (সাধারণত টিন এবং সীসার মিশ্রণ) দ্রবীভূত হয়ে যায়। সোল্ডারিং আয়রনের গরম টিপ সোল্ডারকে নির্দিষ্ট স্থানে গলিয়ে ইলেকট্রনিক সার্কিটের দুই অংশকে সংযুক্ত করে। এরপর সোল্ডার ঠান্ডা হয়ে গেলে ধাতুর অংশগুলি স্থায়ীভাবে একত্রিত থাকে।
সাধারণত সোল্ডারিং আয়রন ব্যবহার করতে নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করা হয়:
1. সোল্ডারিং আয়রন গরম করা।
2. সোল্ডারিং স্থানে সোল্ডার প্রয়োগ করা।
3. সোল্ডার ঠান্ডা হয়ে শক্ত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা।
এটি মোবাইল সার্ভিসিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয়, কারণ অনেক সময় ছোট যন্ত্রাংশ বা তারগুলি নতুনভাবে সংযুক্ত করার প্রয়োজন হয়।
৫/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল "মাইক্রোস্কোপ" Microscope
মোবাইল সার্ভিসিং টুল হিসেবে মাইক্রোস্কোপ হলো একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র, যা ছোট ও সূক্ষ্ম অংশের সমস্যা নির্ণয় এবং মেরামতে সহায়ক। মোবাইল সার্ভিসিংয়ে যে মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করা হয়, সেটি সাধারণত ডিজিটাল মাইক্রোস্কোপ বা স্টেরিও মাইক্রোস্কোপ হয়ে থাকে। এটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন লেন্স এবং আলো ব্যবহার করে ক্ষুদ্র অংশগুলো বড় করে দেখায়, যা চোখে দেখা সম্ভব নয়।
মাইক্রোস্কোপের প্রয়োজনীয়তা এবং কাজ:
1. ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ পর্যবেক্ষণ: মাইক্রোস্কোপ মোবাইলের মাদারবোর্ডের ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ যেমন রেজিস্টর, ক্যাপাসিটার, ট্রানজিস্টর ইত্যাদি পরিষ্কারভাবে দেখতে সাহায্য করে।
2. ফাঁটল বা ক্ষতি শনাক্তকরণ: মাদারবোর্ড বা অন্যান্য সার্কিট বোর্ডে ফাঁটল বা ক্ষতি খুঁজে পেতে মাইক্রোস্কোপ ব্যবহৃত হয়। এতে কোনো অংশে ত্রুটি থাকলে দ্রুত শনাক্ত করা যায়।
3. সোল্ডারিং নির্ভুলভাবে করা: ক্ষুদ্র অংশে সোল্ডারিং করতে মাইক্রোস্কোপ ব্যবহৃত হয়। এটি সার্কিটের পয়েন্টগুলো স্পষ্টভাবে দেখাতে সাহায্য করে, যাতে সোল্ডারিং নিখুঁতভাবে করা যায়।
4. ট্রেসিং ও পরীক্ষা: মাদারবোর্ডের সার্কিট লাইন বা ট্রেসিং পাথ ঠিকঠাক আছে কিনা, তা পরীক্ষা করতে মাইক্রোস্কোপ সহায়ক।
5. ময়লা বা জং অপসারণ: কখনো মাদারবোর্ডে ময়লা বা জং জমে গেলে মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে তা খুঁজে বের করে পরিষ্কার করা হয়।
মাইক্রোস্কোপ ছাড়া এই ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশগুলোর নির্ভুল মেরামত করা অনেক কঠিন। এটি সার্ভিসিং প্রক্রিয়ার মান বাড়িয়ে তোলে এবং মেরামতের সঠিকতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৬/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল "পাওয়ার সাপ্লাইয়ার"
মোবাইল সার্ভিসিং টুল হিসেবে পাওয়ার সাপ্লাইয়ার হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র, যা মোবাইল ফোন বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসে নির্দিষ্ট পরিমাণে বৈদ্যুতিক শক্তি সরবরাহ করতে ব্যবহৃত হয়। এটি নিয়ন্ত্রিত বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ডিভাইসের বিভিন্ন অংশ পরীক্ষা করতে সহায়ক এবং মূলত সার্কিটের পাওয়ার সমস্যা নির্ণয় এবং সমাধানে ব্যবহৃত হয়।
পাওয়ার সাপ্লাইয়ারের প্রয়োজনীয়তা এবং কাজ:
1. ডিভাইসের পাওয়ার চেক: ফোনে বিদ্যুৎ প্রবাহ ঠিকমতো যাচ্ছে কিনা বা কোনো পাওয়ার লিকেজ আছে কিনা তা পরীক্ষা করা হয়। এতে ফোন ঠিকভাবে চালু হচ্ছে না বা পাওয়ার সমস্যা থাকলে তা শনাক্ত করা যায়।
2. বুটিং এবং সমস্যা নির্ধারণ: অনেক সময় ফোন বুট হচ্ছে না বা অন হচ্ছে না, সেক্ষেত্রে পাওয়ার সাপ্লাইয়ার দিয়ে ফোনের বুটিং চেষ্টা করা হয়। এটি দেখায় ফোনের পাওয়ার সংক্রান্ত সমস্যা আছে কিনা।
3. সার্কিট টেস্ট: মাদারবোর্ডের বিভিন্ন অংশে পাওয়ার প্রবাহ ঠিকমতো হচ্ছে কিনা তা নির্ণয় করা হয়। বিশেষ করে ছোট যন্ত্রাংশ যেমন ট্রানজিস্টর, রেজিস্টর, এবং কনডেন্সারের ভোল্টেজ পরীক্ষা করা হয়।
4. চার্জিং সমস্যার সমাধান: ফোন চার্জ হচ্ছে না বা চার্জ ধরা কমে গেলে পাওয়ার সাপ্লাইয়ার দিয়ে চার্জিং পোর্ট, চার্জিং লাইন এবং চার্জিং আইসি পরীক্ষা করা হয়।
5. শর্ট সার্কিট চেক: ফোনে শর্ট সার্কিট হয়েছে কিনা তা পাওয়ার সাপ্লাইয়ার দিয়ে সহজেই চিহ্নিত করা যায়। শর্ট সার্কিট হলে ফোন অতিরিক্ত কারেন্ট টেনে নেয়, যা পাওয়ার সাপ্লাইয়ার এর ডিসপ্লেতে দেখা যায়।
6. ব্যাটারি বাইপাসিং: ফোনের ব্যাটারি ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা বা ব্যাটারি ছাড়া ফোন চালু হচ্ছে কিনা তা চেক করতে পাওয়ার সাপ্লাইয়ার ব্যবহার করা হয়।
মোবাইল সার্ভিসিংয়ে পাওয়ার সাপ্লাইয়ারের গুরুত্ব
পাওয়ার সাপ্লাইয়ার ছাড়া মোবাইল সার্ভিসিংয়ে সঠিকভাবে পাওয়ার সম্পর্কিত সমস্যা নির্ণয় করা কঠিন। এটি ব্যবহার করে পাওয়ারের সঠিক অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় এবং মেরামতের প্রক্রিয়া আরও সহজ ও নির্ভুল হয়।
৭/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল "টুইজার"
টুইজার একটি গুরুত্বপূর্ণ মোবাইল সার্ভিসিং টুল, যা ক্ষুদ্র ও সূক্ষ্ম যন্ত্রাংশ ধরে রাখতে বা কাজ করতে ব্যবহৃত হয়। মোবাইল ফোনের মাদারবোর্ড বা অন্যান্য ছোট ইলেকট্রনিক অংশের মেরামতের সময় টুইজার অপরিহার্য একটি যন্ত্র, কারণ এটি বিভিন্ন সূক্ষ্ম কাজ দ্রুত ও নির্ভুলভাবে সম্পাদন করতে সাহায্য করে।
টুইজারের প্রয়োজনীয়তা এবং কাজ:
1. ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ ধরা: মাদারবোর্ডে থাকা ছোট যন্ত্রাংশ, যেমন রেজিস্টর, ক্যাপাসিটার, চিপ, বা তারগুলো সহজে ধরতে এবং সেট করতে টুইজার ব্যবহৃত হয়। এটি দিয়ে আঙ্গুলের চেয়ে অনেক নির্ভুলভাবে কাজ করা সম্ভব হয়।
2. সোল্ডারিং এ সহায়তা: সোল্ডারিংয়ের সময় টুইজার দিয়ে ছোট যন্ত্রাংশ ধরে সঠিক স্থানে রাখা যায়, যাতে সোল্ডারিং নির্ভুলভাবে করা যায়। এতে জায়গা পরিবর্তনের ঝুঁকি কম থাকে।
3. ময়লা বা অবাঞ্ছিত উপাদান অপসারণ: মাদারবোর্ডে ধুলা, ময়লা বা ক্ষুদ্র কোন কণা থাকলে, টুইজারের সাহায্যে তা সরানো যায়। অনেক সময় পুরানো সোল্ডারিং অপসারণ করতেও এটি ব্যবহৃত হয়।
4. তাপ-সংবেদনশীল অংশ ধরতে সহায়ক: মাদারবোর্ড বা অন্যান্য সার্কিটের তাপ-সংবেদনশীল অংশগুলো সরাসরি আঙ্গুল দিয়ে ধরলে ক্ষতি হতে পারে, তাই টুইজার ব্যবহার করে তা নিরাপদে ধরা হয়।
5. ক্যাবল বা কনেক্টর সংযোগ: অনেক সময় ক্ষুদ্র ক্যাবল বা কনেক্টর সংযোগ করতে টুইজার ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে ফ্লেক্স ক্যাবল বা ছোট কেবলগুলো।
মোবাইল সার্ভিসিংয়ে টুইজারের গুরুত্ব
টুইজার ছাড়া মোবাইল সার্ভিসিং কার্যক্রমে ছোট ছোট যন্ত্রাংশ মেরামত বা সংযোগ করাটা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। এটি সার্ভিসিং প্রক্রিয়ার সময়, ধৈর্য ও নির্ভুলতা বৃদ্ধি করে এবং ডিভাইসের ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশের ক্ষতি রোধ করতে সহায়ক হয়।
৮/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল "জাম্পার ওয়ার"
জাম্পার ওয়ার হলো একটি সরু তামার তার বা কন্ডাক্টর, যা মোবাইল সার্ভিসিংয়ে সার্কিটের দুটি বিন্দুকে সংযুক্ত করতে ব্যবহৃত হয়। যখন মোবাইল ফোনের মাদারবোর্ডে কোনো নির্দিষ্ট অংশ বা লাইন ভেঙে যায় বা সার্কিট বিচ্ছিন্ন হয়, তখন জাম্পার ওয়ার দিয়ে সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়।
জাম্পার ওয়ারের প্রয়োজনীয়তা এবং কাজ:
1. ব্রেক হওয়া সার্কিট পুনরায় সংযুক্তি: কোনো সার্কিটের ট্রেস বা লাইন ভেঙে গেলে, সেটি ঠিক করতে জাম্পার ওয়ার ব্যবহার করা হয়। এটি সার্কিটের ভাঙা অংশে একটি নতুন পথ তৈরি করে, যাতে বিদ্যুৎ প্রবাহ অব্যাহত থাকে।
2. মাদারবোর্ডের ট্রেস রিপেয়ার: অনেক সময় মাদারবোর্ডের খুব ছোট অংশের ট্রেস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে সার্কিটে সমস্যা দেখা দেয়। জাম্পার ওয়ার এই ক্ষতিগ্রস্ত ট্রেসে সংযোগ করে মাদারবোর্ডের কার্যকারিতা ঠিক রাখে।
3. আইসি (IC) ও অন্যান্য ক্ষুদ্র অংশ সংযুক্ত করা: কখনও আইসি বা চিপ এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র অংশে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে জাম্পার ওয়ার দিয়ে তাদের পুনরায় সংযোগ করা হয়।
4. ফিউজ বা রেজিস্টরের বাইপাস: যদি কোনো ফিউজ বা রেজিস্টর কাজ না করে, তবে সেটি বাইপাস করে বিদ্যুৎ প্রবাহ চালু রাখতে জাম্পার ওয়ার ব্যবহৃত হয়।
5. শর্ট সার্কিট মেরামত: কোনো অংশ শর্ট সার্কিট হয়ে গেলে বা বিদ্যুৎ সঠিকভাবে পৌঁছাতে না পারলে, জাম্পার ওয়ার ব্যবহার করে নতুন সংযোগ স্থাপন করা যায়।
মোবাইল সার্ভিসিংয়ে জাম্পার ওয়ারের গুরুত্ব
জাম্পার ওয়ার মোবাইল সার্ভিসিংয়ের ক্ষেত্রে অনেক জরুরি, কারণ এটি ক্ষতিগ্রস্ত সার্কিট বা সংযোগ পুনরুদ্ধারে সহজ সমাধান প্রদান করে। এতে সার্কিটের কার্যকারিতা ঠিক থাকে এবং মাদারবোর্ডের বিভিন্ন ক্ষুদ্র সমস্যার সমাধান করা সহজ হয়।
৮/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল "ওপেনার"!
ওপেনার হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ মোবাইল সার্ভিসিং টুল, যা মোবাইল ফোনের কভার বা ব্যাক প্যানেলসহ বিভিন্ন অংশ সহজে ও নিরাপদে খোলার জন্য ব্যবহৃত হয়। মোবাইল ফোনের ভেতরে কোনো অংশ মেরামত বা পরীক্ষা করার প্রয়োজন হলে ওপেনার টুল দিয়ে ফোনের কেসিং খোলা হয়।
ওপেনারের প্রয়োজনীয়তা এবং কাজ:
1. ফোনের কভার এবং ব্যাক প্যানেল খোলা: ওপেনার টুল ব্যবহার করে ফোনের কভার বা ব্যাক প্যানেল সহজে খোলা যায়। এটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয় যাতে ফোনের কেসিংয়ে কোনো দাগ বা ক্ষতি না হয়।
2. স্ক্রিন অপসারণ: অনেক ওপেনার টুল পাতলা ও নমনীয় হয়, যা ফোনের স্ক্রিন বা ডিজিটাইজার আলাদা করতে সহায়ক। এতে স্ক্রিন মেরামত বা পরিবর্তন করতে সুবিধা হয়।
3. ফোনের ভেতরের অংশে প্রবেশ: ফোনের কেসিং বা স্ক্রিন খোলার পর ভেতরের সার্কিট এবং মাদারবোর্ডে প্রবেশ করা সহজ হয়, যা মেরামতের জন্য জরুরি।
4. নিরাপত্তা রক্ষা: ওপেনার টুল ফোনের সংবেদনশীল অংশ, যেমন ক্যাবল ও পোর্টগুলোকে সুরক্ষিত রেখে কাজ করে। এটি আঙুল বা অন্য কোনো টুল ব্যবহারের চেয়ে নিরাপদ, কারণ এতে কেসিং বা স্ক্রিনে চির বা ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি থাকে না।
5. আঠালো অংশ আলাদা করা: অনেক ফোনের অংশ আঠালো পদার্থ দিয়ে যুক্ত থাকে। ওপেনার টুল সেই আঠালো অংশ আলাদা করতে সহায়ক, বিশেষত ব্যাটারি বা ব্যাক কভার খুলতে।
মোবাইল সার্ভিসিংয়ে ওপেনারের গুরুত্ব
মোবাইল সার্ভিসিংয়ে ওপেনার টুল ছাড়া ফোন খোলা অনেক কঠিন এবং ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এটি ব্যবহারের ফলে ফোনের ক্ষতি ছাড়াই দ্রুত ও নিরাপদে মেরামতের কাজ করা যায়।
১০- মোবাইল সার্ভিসিং টুল (পিসিবি স্টান্ড) PCB Stand.
পিসিবি স্ট্যান্ড (PCB stand) একটি বিশেষ উপাদান, যা প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড (PCB) কে স্থির এবং নিরাপদভাবে ধরে রাখার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মধ্যে সার্কিট বোর্ডকে মাউন্ট করে রেখে দেয়, যাতে বোর্ডটি ঠিকঠাকভাবে অবস্থান করতে পারে এবং ঝাঁকুনি বা চাপে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। পিসিবি স্ট্যান্ড প্লাস্টিক, ধাতু বা অন্যান্য উপকরণ দিয়ে তৈরি হতে পারে এবং এটি বিভিন্ন আকার ও মাপের হয়ে থাকে। এই স্ট্যান্ডগুলো বোর্ডের বায়ুচলাচল নিশ্চিত করে এবং বোর্ডের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
১১/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল (কাটিং প্লাস) Cutting pluss.
"কাটিং প্লাস" একটি মোবাইল সার্ভিসিং টুল যা সাধারণত মোবাইল মেরামতের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এটি মূলত কেবল, ওয়্যার বা অন্যান্য ছোট উপাদান কাটার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। কাটিং প্লাস দিয়ে নির্ভুলভাবে কেটে নেওয়া যায়, যা সার্কিট বোর্ড বা অন্যান্য সংবেদনশীল অংশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই টুলটি বিভিন্ন আকৃতি ও আকারে পাওয়া যায় এবং মোবাইল সার্ভিসিং ছাড়াও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক কাজ, যেমন ল্যাপটপ সার্ভিসিং, ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম মেরামত ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয়।
১২/ মোবাইল সার্ভিসিং টুল (আর্ট নাইফ) Art Nife.
"আর্ট নাইফ" একটি মোবাইল সার্ভিসিং টুল, যা সাধারণত মোবাইল ফোনের সার্কিট বা ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশের সূক্ষ্ম কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি দেখতে অনেকটা ছোট এবং ধারালো, যা সূক্ষ্ম কাটিং এবং পিলিং (খোসা ছাড়ানো) কাজে বিশেষভাবে উপযোগী। আর্ট নাইফ দিয়ে সার্কিট বোর্ডের তামার পাতলা লাইনগুলি কাটা, মাইক্রো তার খোসা ছাড়ানো, এবং নির্ভুলভাবে আঠালো অংশ সরানোর মতো কাজ করা যায়। মোবাইল সার্ভিসিং ছাড়াও এটি মডেল তৈরির কাজ, ক্যালিগ্রাফি, এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক মেরামতের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
১৩/ মোবাইল সার্ভিসিং টুল (সার্ভিসিং রেত) Serviceing Ret.
দুঃখিত, সঠিক তথ্য দিতে পারিনি। "রেত" (ret) মোবাইল সার্ভিসিংয়ে একটি বিশেষ ধরনের টুল, যা মূলত সোল্ডারিং কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত ছোট এবং ধারালো হয়, যা মাইক্রো চিপ বা সার্কিট বোর্ড থেকে পুরনো সোল্ডার অপসারণ করার জন্য ব্যবহৃত হয়। রেত দিয়ে সঠিকভাবে সোল্ডার অপসারণ করা সম্ভব হয়, যা নতুন সোল্ডারিংয়ের জন্য প্রস্তুতি নেয়। এটি মোবাইল সার্ভিসিং ছাড়াও অন্যান্য ইলেকট্রনিক মেরামতের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
১৪/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল (সর্ট কিলার) short killer.
"সর্ট কিলার" একটি গুরুত্বপূর্ণ মোবাইল সার্ভিসিং টুল যা মূলত শর্ট সার্কিটের সমস্যা নির্ণয় এবং ঠিক করতে ব্যবহৃত হয়। মোবাইল সার্কিট বোর্ডে কোন অংশে শর্ট সার্কিট ঘটেছে, তা সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে এই টুল সাহায্য করে। এটি ব্যাটারি কিংবা চার্জিং সিস্টেমে সমস্যা হলে বা যেকোনো কম্পোনেন্ট শর্ট হলে দ্রুত সনাক্ত করতে পারার মাধ্যমে মোবাইল সার্ভিসিংকে সহজ করে তোলে।
১৫/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল (স্ক্রু ড্রাইভার সেট) sqrue drivers set.
স্ক্রু ড্রাইভার মোবাইল সার্ভিসিংয়ের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ টুল, যা মোবাইল ফোন খুলতে এবং পুনরায় সংযোজন করতে ব্যবহৃত হয়। এটি বিভিন্ন আকারের এবং প্রকারের স্ক্রু খুলতে সহায়ক, বিশেষত ফোনের ভেতরে থাকা ছোট স্ক্রুগুলো খোলার জন্য। মোবাইল সার্ভিসিংয়ের সময় এটি সঠিকভাবে ব্যবহার করা হলে ফোনের ভেতরের বিভিন্ন অংশে সহজে প্রবেশ করে মেরামত করা সম্ভব হয়।
১৬/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল (ব্রাশ) Bruss.
মোবাইল সার্ভিসিং টুল হিসেবে "ব্রাশ" মূলত ফোনের মাদারবোর্ড ও অন্যান্য ভেতরের অংশ পরিষ্কারের কাজে ব্যবহৃত হয়। এটি ধুলা, ময়লা, এবং অন্যান্য অবাঞ্ছিত উপাদান সরিয়ে সার্কিট বোর্ড ও ক্ষুদ্র অংশগুলোকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। পরিষ্কার ব্রাশ ব্যবহারে মাদারবোর্ডের কার্যকারিতা উন্নত হয় এবং সার্ভিসিংয়ের সময় কম্পোনেন্টে কোনো সমস্যা থাকলে তা সহজে চিহ্নিত করা যায়।
১৭/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল (আইসি প্লেট) IC Plate.
"আইসি প্লেট" একটি গুরুত্বপূর্ণ মোবাইল সার্ভিসিং টুল যা মূলত আইসি (ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট) চিপগুলো সরানোর এবং বসানোর কাজে ব্যবহৃত হয়। এটি মাদারবোর্ডে চিপগুলো স্থিতিশীলভাবে ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং আইসি রিমুভ বা রিপ্লেস করার সময় সঠিক স্থান নির্ধারণে সহায়তা করে। আইসি প্লেট ব্যবহারের ফলে সার্ভিসিংয়ের সময় চিপগুলোর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কমে এবং কাজটি সহজ ও নির্ভুলভাবে সম্পন্ন হয়।
১৮/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল (টাচ সেপারেটর মেশিন) Touch Separetor machine.
"টাচ সেপারেটর মেশিন" একটি বিশেষ মোবাইল সার্ভিসিং টুল যা মূলত মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে ও টাচ স্ক্রিন পৃথক করার কাজে ব্যবহৃত হয়। এটি স্ক্রিনে গরম বাতাস বা হিটিং প্লেটের মাধ্যমে আঠা গলিয়ে স্ক্রিন এবং টাচ প্যানেল আলাদা করতে সাহায্য করে। টাচ সেপারেটর মেশিন বিশেষত তখন দরকারি হয় যখন স্ক্রিনে ফাটল ধরে কিন্তু টাচ ঠিক থাকে; এই ক্ষেত্রে নতুন টাচ প্যানেল সংযোজনের মাধ্যমে ডিসপ্লে মেরামত সম্ভব হয়, যা খরচ সাশ্রয়ী এবং কার্যকর।
১৯/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল (রজন সোল্ডার ওয়ার) (Resin Solder ware)
"সোল্ডার ওয়ার" মোবাইল সার্ভিসিংয়ে ব্যবহৃত একটি বিশেষ তার, যা ইলেকট্রনিক কম্পোনেন্ট বা সংযোগ স্থাপনের জন্য সোল্ডারিং বা ঝালাই করার কাজে ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত একটি মেটাল অ্যালয় দিয়ে তৈরি, যা তাপে গলে গিয়ে সংযোগ স্থাপনে সাহায্য করে। সোল্ডার ওয়ার দিয়ে সার্কিট বোর্ডে খুঁটিনাটি অংশ যেমন ক্ষুদ্র কম্পোনেন্ট বা তারের সংযোগ সঠিকভাবে স্থাপন করা যায়। মোবাইল সার্ভিসিংয়ের ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত জরুরি, কারণ সঠিক সংযোগ ছাড়া মাদারবোর্ড বা অন্যান্য অংশ সঠিকভাবে কাজ করে না।
২০/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল (ইউ ভি সোল্ডার মাস্ক) UV solder mask.
"ইউভি সোল্ডার মাস্ক" মোবাইল সার্ভিসিংয়ে ব্যবহৃত একটি বিশেষ উপকরণ, যা মাদারবোর্ডের ক্ষুদ্র সার্কিট বা ট্রেসের ক্ষতি প্রতিরোধে সহায়ক। এটি তরল আকারে থাকে এবং ক্ষতিগ্রস্ত অংশ বা খোলা সংযোগের ওপর প্রয়োগ করা হয়। এরপর আল্ট্রাভায়োলেট (UV) আলো প্রয়োগ করলে এটি শক্ত হয়ে যায়, ফলে সংযোগটি সুরক্ষিত থাকে এবং শর্ট সার্কিট হওয়ার সম্ভাবনা কমে। ইউভি সোল্ডার মাস্ক ব্যবহারের মাধ্যমে মাদারবোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে রক্ষা করা যায় এবং সার্ভিসিংয়ের সময় নির্ভুলতা বৃদ্ধি পায়।
২১/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল (ইউ ভি ল্যাম্প) UV Lamp.
"ইউভি ল্যাম্প" মোবাইল সার্ভিসিংয়ে ব্যবহৃত একটি বিশেষ আলো যা ইউভি (আল্ট্রাভায়োলেট) রশ্মি নির্গত করে। এটি মূলত ইউভি সোল্ডার মাস্ক বা অন্যান্য ইউভি নির্ভর উপকরণকে দ্রুত শক্ত বা স্থিতিশীল করতে ব্যবহৃত হয়। যখন মাদারবোর্ডের কোনো ক্ষতিগ্রস্ত অংশে ইউভি সোল্ডার মাস্ক প্রয়োগ করা হয়, তখন ইউভি ল্যাম্পের সাহায্যে তা শক্ত করে সংযোগটি সুরক্ষিত রাখা হয়। এছাড়াও ইউভি ল্যাম্প কিছু বিশেষ আঠা বা আঠালো পদার্থের স্থায়িত্ব বাড়াতে কাজে লাগে, যা মোবাইল সার্ভিসিংকে আরও কার্যকর ও নির্ভুল করে তোলে।
/div>
২২/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল (আইসি রিবল পেস্ট) IC Treble pest.
"আইসি রিবল পেস্ট" মোবাইল সার্ভিসিংয়ের একটি বিশেষ ধরনের পেস্ট যা মাদারবোর্ডের আইসি (ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট) চিপের পুনঃসংযোগ বা রিপ্লেসমেন্টে ব্যবহৃত হয়। এটি ছোট ছোট বল বা সোল্ডার পেস্টের মিশ্রণ, যা আইসি চিপের প্যাডগুলোর ওপর প্রয়োগ করা হয়। এরপর তাপ প্রয়োগের মাধ্যমে এটি গলে গিয়ে নতুন সংযোগ তৈরি করে। আইসি রিবল পেস্ট ব্যবহার করে ক্ষতিগ্রস্ত বা আলগা হয়ে যাওয়া আইসি চিপগুলোকে পুনরায় মাদারবোর্ডে স্থাপন করা সহজ হয় এবং সঠিক সংযোগ নিশ্চিত হয়, যা মোবাইলের কার্যকারিতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।
২৩/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল (সোল্ডার ওয়ার) Solder ware.
"তামার সোল্ডার ওয়ার" একটি মোবাইল সার্ভিসিং টুল যা ইলেকট্রনিক সংযোগ মেরামত বা স্থাপনে ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত খাঁটি তামা (কপার) দিয়ে তৈরি হয় এবং সোল্ডারিং বা ঝালাইয়ের সময় অতিরিক্ত সোল্ডার অপসারণ করতে সহায়ক। সোল্ডারিংয়ের সময় মাদারবোর্ড বা সার্কিট বোর্ডে অতিরিক্ত সোল্ডার জমে গেলে তা তামার সোল্ডার ওয়ার দিয়ে শোষণ করে পরিষ্কার করা যায়। এই টুল ব্যবহারের ফলে সংযোগ আরও নির্ভুল এবং পরিচ্ছন্ন হয়, যা ইলেকট্রনিক সার্কিটের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।
২৪/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল (থিনার) Thiner.
"থিনার" মোবাইল সার্ভিসিংয়ে ব্যবহৃত একটি বিশেষ দ্রব্য, যা সাধারণত আঠা বা সোল্ডারিং পেস্টের সংমিশ্রণকে পাতলা করতে ব্যবহৃত হয়। এটি মাদারবোর্ডের পরিষ্কার ও মেরামতের কাজের সময় প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী আঠা বা সোল্ডারিং পেস্টের ঘনত্ব কমাতে সাহায্য করে। থিনার ব্যবহার করে মাদারবোর্ডের ভেতরের অংশে বা সংযোগস্থলে সঠিক পরিমাণে সোল্ডারিং করা যায়, যা সার্কিট বোর্ডের কার্যকারিতা ও স্থায়িত্ব বজায় রাখতে সহায়ক। তাছাড়া, এটি মাদারবোর্ডে অবাঞ্ছিত আঠা বা ময়লা অপসারণের জন্যও কার্যকর।
২৫/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল ( ফাস্ট চার্জার Fast Charger)
"কুইক চার্জার" একটি বিশেষ ধরনের চার্জিং ডিভাইস যা মোবাইল ফোন এবং অন্যান্য ডিভাইসকে দ্রুত চার্জ করতে সক্ষম। এটি সাধারণত উচ্চ ক্ষমতার পাওয়ার আউটপুট প্রদান করে, ফলে ডিভাইসগুলো স্বাভাবিক চার্জারের তুলনায় অনেক কম সময়ে পূর্ণ চার্জ হতে পারে। কুইক চার্জারগুলো সাধারণত Qualcomm Quick Charge, USB Power Delivery (PD), বা অন্যান্য দ্রুত চার্জিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে, যা ডিভাইসের ব্যাটারির সুরক্ষাও নিশ্চিত করে। মোবাইল সার্ভিসিংয়ের ক্ষেত্রে, কুইক চার্জার ব্যবহৃত হয় ফোনের ব্যাটারি পরীক্ষা বা মেরামতের জন্য দ্রুত শক্তি সরবরাহ করার কাজে।
২৬/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল (এল সিডি ওপেনার) LCD Opener.
"এল সিডি ওপেনার" একটি বিশেষ টুল যা মোবাইল সার্ভিসিংয়ে এলসিডি (LCD) ডিসপ্লে খুলতে ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত পাতলা ও হালকা হয়ে থাকে, যাতে এটি ডিসপ্লে প্যানেলকে ক্ষতি না করে নিরাপদে খুলতে পারে। এল সিডি ওপেনার ব্যবহার করে ফোনের সামনে বা পিছনের এলসিডি স্ক্রিন আলাদা করা হয়, যা মেরামত বা রিপ্লেসমেন্টের জন্য প্রয়োজনীয়। এই টুলটি সার্ভিসিংয়ের সময় দ্রুত ও কার্যকরীভাবে কাজ সম্পন্ন করতে সহায়তা করে, ফলে সঠিক মেরামতের জন্য স্ক্রিনগুলো নিরাপদে খুলে ফেলা সম্ভব হয়।
২৭/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল (এন্টি কাটার) Anti Cutter.
"এন্টি কাটার" একটি বিশেষ টুল যা মোবাইল সার্ভিসিংয়ে ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত অ্যান্টি-স্ট্যাটিক এবং তীক্ষ্ণ ব্লেড যুক্ত একটি ডিভাইস, যা মোবাইল ফোনের বিভিন্ন অংশ বা তারের উপর থেকে আঠা বা ক্যাবল কাটার কাজে ব্যবহৃত হয়। এই টুলটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয় যাতে এটি মাদারবোর্ড বা অন্যান্য সংযোগস্থলে ক্ষতি না করে কাটতে পারে। এন্টি কাটার ব্যবহার করে মোবাইল সার্ভিসিংয়ে দ্রুত ও সঠিকভাবে কাজ সম্পন্ন করা যায়, যা সার্ভিসিংয়ের সময় নিরাপত্তা এবং নির্ভুলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
২৮/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল (সাদা কালো গাম) Black & white gum.
"সাদা কালো গাম" মোবাইল সার্ভিসিংয়ে ব্যবহৃত একটি বিশেষ আঠা, যা সাধারণত ডিসপ্লে, টাচ প্যানেল বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক কম্পোনেন্ট স্থাপন করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি দুই ধরনের—সাদা এবং কালো, যা বিভিন্ন প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করা হয়। সাদা গাম সাধারণত আচ্ছাদনের কাজের জন্য এবং কালো গাম সাধারণত ভেতরের সংযোগ স্থাপনে ব্যবহৃত হয়। এই আঠাটি দ্রুত শক্ত হয়ে যায় এবং একটি শক্তিশালী সংযোগ প্রদান করে, ফলে ফোনের বিভিন্ন অংশের স্থায়িত্ব এবং কার্যকারিতা নিশ্চিত হয়। মোবাইল সার্ভিসিংয়ের ক্ষেত্রে, সাদা কালো গাম ব্যবহৃত হয় মেরামত, রিপ্লেসমেন্ট এবং অন্যান্য ফিক্সিংয়ের কাজের জন্য।
29/- মোবাইল সার্ভিসিং টুল (মেডিকেল টেপ। Madical tape)
"মেডিকেল টেপ" মোবাইল সার্ভিসিংয়ে ব্যবহৃত একটি বিশেষ টুল যা সাধারণত আঠালো এবং নমনীয়। এটি মূলত ফোনের বিভিন্ন অংশ, যেমন ডিসপ্লে বা টাচ প্যানেলকে সুরক্ষিত ও স্থিতিশীল রাখতে ব্যবহৃত হয়। মেডিকেল টেপ সঠিকভাবে সংযোগ স্থাপন এবং ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলোকে সুরক্ষিত করার জন্য কার্যকর। এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এটি সহজে ছিঁড়ে যায় এবং প্রয়োজন অনুযায়ী কাটা যায়, ফলে মেরামত কাজের সময় এটি ব্যবহার করা সহজ হয়। মেডিকেল টেপ সাধারণত গরমে ও ঠাণ্ডায় প্রতিরোধী এবং এতে ব্যবহারকারী বা ডিভাইসের জন্য ক্ষতিকর পদার্থ থাকে না, যা মোবাইল সার্ভিসিংয়ের ক্ষেত্রে নিরাপদ ও কার্যকর সমাধান দেয়।