মোবাইল সার্ভিসিং ফুলকোর্স- পার্ট-২ প্রসেসর কি এবং কিভাবে কাজ করে, ভালো প্রসেসর কোনটি।

 মোবাইল সার্ভিসিং ফুলকোর্স- পার্ট-২ 

আজকের আলোচনা প্রসেসর কি, প্রসেসর কিভাবে কাজ করে, বর্তমানে চলমান প্রসেসর গুলো কি কি? প্রসেসরের ভবিষ্যৎ কি?

Mobile Servicing Full Course - Part-2 

Today's discussion What is the processor, how does the processor work, what are the currently running processors?  What is the future of processors?

মোবাইল সার্ভিসিং শিখুন আমাদের সাথে, আমরা সম্পুর্ণ কোর্স বিস্তারিত শিখাবো এই ওয়েব সাইটে। আমাদের সাথেই থাকুন। মোবাইল সার্ভিসিং শিখে নিজের ক্যারিয়ার তৈরী করুন।


প্রসেসর কি?

প্রসেসর হলো একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস বা মাইক্রোচিপ যা কম্পিউটার বা মোবাইল ডিভাইসের যাবতীয় কাজ পরিচালনা করে। প্রসেসরকে CPU (Central Processing Unit) বলা হয়। এটি ডিভাইসের মস্তিষ্ক হিসেবে কাজ করে এবং বিভিন্ন নির্দেশনা অনুসারে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ করে।

প্রসেসর কিভাবে কাজ করে?

প্রসেসরের কাজের প্রক্রিয়া কয়েকটি ধাপে বিভক্ত:

1. Fetch (নির্দেশনা আনা): প্রসেসর মেমরি থেকে নির্দেশনা (Instruction) সংগ্রহ করে।

2. Decode (ডিকোড): আনা নির্দেশনা বিশ্লেষণ করা হয়, যেন প্রসেসর বুঝতে পারে কী করতে হবে।

3. Execute (নির্বাহ): নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, গণনা, ডেটা সরানো, বা নির্দিষ্ট কোনো অ্যাকশন নেওয়া।

4. Write Back (ফলাফল লেখা): কার্যকরীর ফলাফল মেমরিতে সংরক্ষিত হয় বা পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়।

প্রসেসর কয়েকটি কোরে বিভক্ত হতে পারে, যেমন ডুয়াল কোর (২ কোর), কোয়াড কোর (৪ কোর), অক্টা কোর (৮ কোর) ইত্যাদি। যত বেশি কোর থাকে, তত দ্রুত ডেটা প্রক্রিয়াকরণ করা সম্ভব।

বর্তমানে মোবাইলে ব্যবহৃত প্রসেসরসমূহ

বর্তমানে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন ধরনের প্রসেসর ব্যবহৃত হয়, যেমন:

1. Qualcomm Snapdragon: গেমিং, ক্যামেরা পারফরম্যান্স এবং ব্যাটারি অপ্টিমাইজেশনে জনপ্রিয়।

2. Apple A সিরিজ: আইফোনে ব্যবহৃত প্রসেসর, যেমন A17 Bionic যা অ্যাপল নিজস্বভাবে তৈরি করে।

3. MediaTek Dimensity & Helio: মিড-রেঞ্জ থেকে প্রিমিয়াম ডিভাইসের জন্য ব্যবহৃত হয়। গেমিং এবং পারফরম্যান্সে ভালো।

4. Samsung Exynos: স্যামসাংয়ের নিজস্ব প্রসেসর, যা তাদের গ্যালাক্সি ডিভাইসগুলোতে ব্যবহৃত হয়।

5. Kirin (Huawei): হুয়াওয়ে তাদের ফোনে এই প্রসেসর ব্যবহার করে।

6. Unisoc (বা Spreadtrum): Unisoc কম দামের ডিভাইসের জন্য প্রসেসর তৈরি করে। সাধারণত বাজেট স্মার্টফোনে ব্যবহৃত হয়। এই প্রসেসরগুলো সাধারণ টাস্ক বা সাধারণ মোবাইল ইউজের জন্য ভালো।

7. NVIDIA Tegra: NVIDIA তাদের Tegra সিরিজের প্রসেসর তৈরি করেছিল, যা গেমিং এবং গ্রাফিক্সের জন্য শক্তিশালী। এই প্রসেসরগুলো গেমিং ট্যাবলেট বা শিল্ড ট্যাবলেটের মতো ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়।

8. Intel Atom এবং Core M: ইন্টেল মোবাইল এবং ট্যাবলেটের জন্য Atom এবং Core M প্রসেসর তৈরি করেছে। তবে এগুলো সাধারণত কম ব্যবহৃত হয়, কারণ মোবাইল প্রসেসরের জন্য ইন্টেল প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে।

9. Google Tensor: গুগল তাদের পিক্সেল ডিভাইসগুলোর জন্য কাস্টমাইজড Tensor প্রসেসর তৈরি করেছে। এটি মূলত এআই এবং মেশিন লার্নিং-এর মাধ্যমে ছবি এবং ভিডিও প্রসেসিংয়ে উন্নত পারফরম্যান্স প্রদান করে।

প্রসেসরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর

1. কোর সংখ্যা (Core Count): কোর সংখ্যা যত বেশি হবে, প্রসেসর তত বেশি কাজ একসাথে করতে পারবে। উদাহরণস্বরূপ, হেক্সা-কোর (৬ কোর), ডেকা-কোর (১০ কোর) ইত্যাদি।

2. ক্লক স্পিড (Clock Speed): ক্লক স্পিড GHz (গিগাহার্জ) এ মাপা হয় এবং এটি নির্দেশ করে প্রসেসর প্রতি সেকেন্ডে কতটা কাজ করতে পারে। স্পিড যত বেশি হবে, প্রসেসর তত দ্রুত কাজ করবে।

3. জিপিইউ ইন্টিগ্রেশন: অনেক প্রসেসর তাদের নিজস্ব গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট (GPU) নিয়ে আসে যা গেমিং বা ভিডিও গ্রাফিক্সের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমনঃ Adreno (Snapdragon প্রসেসরে ব্যবহৃত), Mali (MediaTek এবং Exynos প্রসেসরে ব্যবহৃত), এবং Apple এর নিজস্ব GPU।

4. পাওয়ার ইফিসিয়েন্সি: প্রসেসরের পাওয়ার ব্যবহারের দক্ষতা ব্যাটারির উপর নির্ভর করে। পাওয়ার-ইফিসিয়েন্ট প্রসেসরগুলো কম ব্যাটারি খরচে দীর্ঘক্ষণ কাজ করতে সক্ষম।

এই প্রসেসরগুলো ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে ডিজাইন করা হয়, যেমন পাওয়ার কনজাম্পশন, পারফরম্যান্স, এবং মাল্টি-টাস্কিং।

হ্যাঁ, মোবাইল এবং অন্যান্য ডিভাইসে ব্যবহৃত প্রসেসরের আরও কিছু উদাহরণ এবং প্রকার রয়েছে। প্রতিটি প্রসেসর তৈরি করা হয় নির্দিষ্ট ডিভাইসের পারফরম্যান্স এবং কার্যকারিতার উপর নির্ভর করে।

মোবাইলে ব্যবহৃত প্রসেসরের ভবিষ্যৎ

আগামীতে মোবাইল প্রসেসরের দিকে আরও নতুন প্রযুক্তির সংযোজন ঘটছে, যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং মেশিন লার্নিং ইন্টিগ্রেশন, দ্রুত ৫জি কানেক্টিভিটি সাপোর্ট, এবং আরো উন্নত শক্তি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি।

Click Here

বিভিন্ন প্রসেসর সমন্ধে ধারণা

1. Qualcomm Snapdragon

Qualcomm Snapdragon প্রসেসর সম্বন্ধে:

Qualcomm Snapdragon হলো একটি উন্নত প্রসেসর সিরিজ যা মোবাইল ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়। Snapdragon প্রসেসরটি মূলত গেমিং, মাল্টিমিডিয়া, এবং এআই ভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশনের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো শক্তিশালী CPU, উন্নত GPU (যেমন Adreno), এবং শক্তিশালী এআই প্রসেসিং ক্ষমতা। এটি মোবাইলের ক্যামেরা, ব্যাটারি লাইফ, এবং নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটিতে উন্নত পারফরম্যান্স দেয়।

Snapdragon-এর বিভিন্ন মডেল রয়েছে যেমন Snapdragon 8 সিরিজ (ফ্ল্যাগশিপ লেভেলের), Snapdragon 7 সিরিজ (উচ্চ-মাঝারি লেভেলের) এবং Snapdragon 6 ও 4 সিরিজ (মাঝারি এবং বাজেট লেভেলের)। এই প্রসেসরগুলো দ্রুত ডেটা প্রক্রিয়াকরণ, উন্নত গ্রাফিক্স, এবং কম ব্যাটারি খরচের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা উন্নত করে।

2. Apple A সিরিজ প্রসেসর:

Apple A সিরিজ হলো অ্যাপলের নিজস্ব ডিজাইন করা প্রসেসর, যা বিশেষভাবে আইফোন, আইপ্যাড, এবং অন্যান্য অ্যাপল ডিভাইসের জন্য তৈরি। এই প্রসেসরগুলি তাদের উচ্চ কার্যক্ষমতা, দক্ষতা, এবং এআই প্রক্রিয়াকরণের জন্য পরিচিত। প্রতিটি নতুন A সিরিজের প্রসেসর আগের চেয়ে শক্তিশালী এবং কার্যক্ষম, যা গেমিং, ক্যামেরা, এবং অন্যান্য ভারী কাজেও দ্রুত পারফরম্যান্স প্রদান করে।

3. MediaTek Dimensity & Helio: 


MediaTek এর Dimensity এবং Helio দুটি প্রসেসর সিরিজ, যা স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেটের জন্য তৈরি করা হয়েছে।

1. MediaTek Dimensity:

Dimensity সিরিজটি ৫জি (5G) সমর্থিত এবং উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন প্রসেসর নিয়ে গঠিত। এটি প্রধানত মিড-রেঞ্জ থেকে শুরু করে প্রিমিয়াম ডিভাইসের জন্য তৈরি করা হয়েছে। Dimensity প্রসেসরগুলি দ্রুত পারফরম্যান্স এবং কম বিদ্যুৎ খরচ নিশ্চিত করে। এই সিরিজে AI, গেমিং, এবং মাল্টিমিডিয়া ফিচার উন্নত করার জন্য বিশেষ প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যেমন Dimensity 1200 এবং 9000।

2. MediaTek Helio:

Helio সিরিজটি সাধারণত ৪জি (4G) সমর্থিত এবং এন্ট্রি-লেভেল থেকে মিড-রেঞ্জ স্মার্টফোনের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। Helio প্রসেসরগুলো মূলত বাজেট ফ্রেন্ডলি স্মার্টফোনের জন্য উপযোগী। Helio G এবং Helio P সিরিজে ভালো গেমিং পারফরম্যান্সের জন্য বিশেষ প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকে, যেমন Helio G85 এবং Helio P60।

সংক্ষেপে, Dimensity সিরিজ আধুনিক ৫জি প্রযুক্তি এবং উচ্চমানের পারফরম্যান্স প্রদান করে, আর Helio সিরিজ মূলত ৪জি ডিভাইসের জন্য এবং বাজেট ফ্রেন্ডলি অপশন।

4. Samsung Exynos:


Samsung Exynos হলো স্যামসাং এর নিজস্ব ডিজাইন করা মোবাইল প্রসেসর সিরিজ, যা স্মার্টফোন, ট্যাবলেট এবং অন্যান্য ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়। Exynos প্রসেসর গুলি প্রধানত Samsung এর ফ্ল্যাগশিপ এবং মিড-রেঞ্জ ডিভাইসের জন্য তৈরি করা হয়।

Exynos প্রসেসরের বৈশিষ্ট্য:

1. পারফরম্যান্স: Exynos প্রসেসরগুলি শক্তিশালী CPU ও GPU ইউনিট নিয়ে গঠিত, যা স্মুথ গেমিং ও মাল্টিটাস্কিং সুবিধা দেয়।

2. ক্যামেরা ও মাল্টিমিডিয়া: উন্নত ইমেজ সিগন্যাল প্রসেসিং (ISP) এবং AI এর মাধ্যমে Exynos ক্যামেরা পারফরম্যান্স, ভিডিও রেকর্ডিং এবং ছবির গুণগত মান বাড়ায়।

3. ৫জি সমর্থন: সাম্প্রতিক Exynos মডেলগুলি ৫জি প্রযুক্তি সমর্থন করে, যা দ্রুত ইন্টারনেট স্পিড এবং উন্নত কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করে। যেমন, Exynos 2100 এবং Exynos 2200 চিপসেটগুলোতে ৫জি সংযোগের সুবিধা আছে।

4. পাওয়ার এফিসিয়েন্সি: স্যামসাং উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে Exynos প্রসেসরগুলিকে শক্তির সাশ্রয়ী করে তোলে, যা ডিভাইসের ব্যাটারি লাইফ দীর্ঘস্থায়ী করতে সাহায্য করে।

সংক্ষেপে:

Samsung Exynos সিরিজ োং তাৃৃৃৃদের ফ্ল্যাগশিপ ডিভাইসগুলির জন্য উচ্চমানের পারফরম্যান্স এবং উন্নত ফিচার প্রদান করে। Exynos প্রসেসরের উচ্চ ক্ষমতা এবং মাল্টিমিডিয়া পারফরম্যান্স একে অন্য প্রসেসর সিরিজের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সহায়ক করে।

5. Kirin (Huawei)


Kirin হলো Huawei-এর নিজস্ব প্রসেসর সিরিজ, যা তাদের ডিভাইসগুলির জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। Kirin চিপসেটগুলি HiSilicon দ্বারা তৈরি করা হয় এবং এটি উচ্চমানের পারফরম্যান্স এবং শক্তি দক্ষতার জন্য পরিচিত।

Kirin প্রসেসরের বৈশিষ্ট্য:

1. পারফরম্যান্স ও AI সমর্থন: Kirin প্রসেসরগুলিতে উন্নত AI প্রসেসিং ইউনিট (NPU) রয়েছে, যা AI-ভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন এবং ফিচারের উন্নতি ঘটায়।

2. ক্যামেরা ও মাল্টিমিডিয়া: Kirin চিপসেটে শক্তিশালী ISP (ইমেজ সিগন্যাল প্রসেসর) রয়েছে, যা ক্যামেরার পারফরম্যান্স উন্নত করে এবং ছবির গুণগত মান বাড়ায়।

3. ৫জি সমর্থন: সাম্প্রতিক Kirin প্রসেসর, যেমন Kirin 990 ও Kirin 9000, ৫জি সমর্থন করে, যা উন্নত কানেক্টিভিটি এবং দ্রুত ইন্টারনেট স্পিড প্রদান করে।

4. শক্তি সাশ্রয়: Kirin প্রসেসরগুলো শক্তি সাশ্রয়ের জন্য পরিচিত, যা ডিভাইসের ব্যাটারি লাইফ দীর্ঘায়িত করতে সাহায্য করে।

সংক্ষেপে:

Kirin প্রসেসর সিরিজটি উন্নত AI, উচ্চমানের পারফরম্যান্স এবং ৫জি প্রযুক্তির জন্য বিখ্যাত। এটি Huawei-এর প্রিমিয়াম এবং মিড-রেঞ্জ স্মার্টফোনে ব্যবহৃত হয়। Kirin প্রসেসরগুলো Huawei ডিভাইসগুলিকে সাশ্রয়ী শক্তি, উচ্চ গতিসম্পন্ন ও উন্নত ক্যামেরা পারফরম্যান্স প্রদান করে।

6. Unisoc (বা Spreadtrum):




Unisoc (পূর্বে Spreadtrum নামে পরিচিত) একটি চীনা চিপসেট নির্মাতা, যা বাজেট-বান্ধব এবং এন্ট্রি-লেভেল স্মার্টফোন ও অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইসের জন্য প্রসেসর তৈরি করে। Unisoc চিপসেটগুলো সাধারণত কম খরচে ভালো পারফরম্যান্স প্রদান করে, যার জন্য এটি সাশ্রয়ী স্মার্টফোনে জনপ্রিয়।

Unisoc চিপসেটের বৈশিষ্ট্য:

1. বাজেট ফ্রেন্ডলি: Unisoc প্রসেসরগুলো সাধারণত এন্ট্রি-লেভেল ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়, যা সাধারণ ব্যবহার এবং হালকা গেমিং এর জন্য উপযোগী।

2. ক্যামেরা ও মাল্টিমিডিয়া: Unisoc চিপসেটগুলি বেসিক ক্যামেরা ফিচার সাপোর্ট করে, যা সাধারণ ছবি তোলা এবং ভিডিও করার জন্য যথেষ্ট।

3. ৪জি ও ৫জি সমর্থন: Unisoc এর সাম্প্রতিক মডেলগুলো ৪জি এবং কিছু মডেল ৫জি সংযোগ সমর্থন করে, যেমন Unisoc T610 এবং Unisoc T7510।

4. পাওয়ার এফিসিয়েন্সি: Unisoc চিপসেটগুলিতে শক্তি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়, যা বাজেট ডিভাইসের ব্যাটারি লাইফ দীর্ঘায়িত করতে সহায়ক।

সংক্ষেপে:

Unisoc বা Spreadtrum চিপসেট সাধারণত সাশ্রয়ী দামে এন্ট্রি-লেভেল ও মিড-রেঞ্জ ডিভাইসের জন্য উপযোগী। এটি ভালো পারফরম্যান্স, সহজ কানেক্টিভিটি, এবং মৌলিক ফিচার প্রদান করে, যা সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট।

7. NVIDIA Tegra

NVIDIA Tegra হলো একটি উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন সিস্টেম-অন-চিপ (SoC) সিরিজ, যা NVIDIA কোম্পানি মূলত মোবাইল এবং এমবেডেড ডিভাইসের জন্য তৈরি করেছে। Tegra চিপগুলোর মূল বৈশিষ্ট্য হলো এতে শক্তিশালী সিপিইউ, জিপিইউ, এবং একাধিক মিডিয়া প্রসেসিং ইউনিট সংযুক্ত থাকে, যা উন্নত গেমিং, ভিডিও এবং মাল্টিমিডিয়া পারফরম্যান্স সরবরাহ করে।

Tegra-এর প্রতিটি সংস্করণে NVIDIA এর CUDA প্রযুক্তি এবং ARM প্রসেসরের সমন্বয়ে শক্তিশালী জিপিইউ স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে গ্রাফিক্স ইনটেন্সিভ অ্যাপ্লিকেশন যেমন উচ্চমানের গেমিং, ৪কে ভিডিও প্লেব্যাক, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, এবং মেশিন লার্নিং কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালনা করা সম্ভব।

বিশেষ করে, NVIDIA Tegra X1 এবং পরবর্তীতে Tegra Xavier সিরিজ বিভিন্ন গেমিং কনসোল, যেমন Nintendo Switch, এবং স্বয়ংচালিত ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে, যেমন ড্রাইভারহীন গাড়ি, স্মার্ট ড্রাইভিং অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং অন্যান্য এআই-নির্ভর অ্যাপ্লিকেশনে। এছাড়াও, Tegra চিপগুলোতে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকায় এটি ব্যাটারি চালিত ডিভাইসেও উন্নত পারফরম্যান্সের সাথে দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি লাইফ নিশ্চিত করে।

8. Intel Atom




Intel Atom হল Intel এর তৈরি একটি লো-পাওয়ার প্রসেসর সিরিজ, যা মূলত ছোট এবং কম বিদ্যুৎ খরচের ডিভাইসগুলোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এটি প্রথম বাজারে আসে ২০০৮ সালে, এবং মূল লক্ষ্য ছিল নেটবুক, ট্যাবলেট, স্মার্টফোন, ইন্টারনেট অফ থিংস (IoT) ডিভাইস এবং অন্যান্য এমবেডেড সিস্টেমের মতো হালকা কাজের জন্য শক্তি সাশ্রয়ী প্রসেসর প্রদান করা।

Intel Atom প্রসেসরগুলোতে কম শক্তি খরচ হলেও সাধারণত যথেষ্ট দক্ষতার সাথে মাল্টিটাস্কিং এবং বেসিক কম্পিউটিং কাজ করতে সক্ষম। এগুলো x86 আর্কিটেকচারে ভিত্তি করে তৈরি, যা অধিকাংশ অপারেটিং সিস্টেমে সহজেই চলে। তবে Atom প্রসেসরের পারফরম্যান্স তুলনামূলকভাবে সীমিত, তাই ভারী কাজ বা গ্রাফিক্স ইনটেন্সিভ অ্যাপ্লিকেশনগুলোর জন্য এটি তেমন উপযুক্ত নয়।

এর বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে:

1. কম শক্তি খরচ: এটি ছোট ডিভাইস ও এমবেডেড সিস্টেমে ব্যবহার উপযোগী, যেখানে ব্যাটারি লাইফ গুরুত্বপূর্ণ।

2. ছোট আকার: Atom প্রসেসরগুলো ছোট আকারের, ফলে এটি বিভিন্ন ছোট ডিভাইসে সহজেই যুক্ত করা যায়।

3. ইন্টিগ্রেটেড গ্রাফিক্স: বেশ কয়েকটি Atom প্রসেসরে ইন্টেল গ্রাফিক্স চিপ ইন্টিগ্রেটেড থাকে, যা লাইট গ্রাফিক্স প্রসেসিং কাজ সহজ করে।

সাম্প্রতিক সময়ে Intel Atom প্রসেসরটি IoT এবং এমবেডেড সিস্টেমে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে এর সীমাবদ্ধ কর্মক্ষমতার কারণে ল্যাপটপ ও ডেস্কটপের মতো উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ডিভাইসে এটি ব্যবহৃত হয় না।

9. Google Tensor


Google Tensor হলো Google-এর নিজস্ব ডিজাইন করা একটি সিস্টেম-অন-চিপ (SoC), যা মূলত তাদের Pixel স্মার্টফোন এবং অন্যান্য ডিভাইসে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এটি প্রথমবার Pixel 6 এবং Pixel 6 Pro মডেলে ব্যবহৃত হয়, যা ২০২১ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। Tensor চিপটি তৈরি করার পেছনে Google-এর উদ্দেশ্য ছিল উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মেশিন লার্নিং ক্ষমতা প্রদান করা, যা সফটওয়্যার এবং হার্ডওয়্যারের মধ্যে একটি গভীর সংযোগ স্থাপন করে।

Google Tensor-এর মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ

1. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মেশিন লার্নিং: Tensor চিপে Google-এর AI এবং মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি বিশেষভাবে অপ্টিমাইজ করা হয়েছে। এটি Google Assistant, রিয়েল-টাইম ট্রান্সলেশন, উন্নত ক্যামেরা প্রসেসিং এবং অন্যান্য AI-নির্ভর কার্যক্রমে উন্নত পারফরম্যান্স প্রদান করে।

2. চিত্র এবং ভিডিও প্রসেসিং: Google Tensor ক্যামেরা পারফরম্যান্সে বিশাল উন্নতি আনে। এতে স্পেশাল ইমেজ প্রসেসিং ইউনিট (ISP) রয়েছে, যা উচ্চমানের ফটোগ্রাফি এবং ভিডিও রেকর্ডিং সম্ভব করে তোলে, বিশেষ করে লো-লাইট ফটোগ্রাফি এবং মোশন ব্লার কমাতে।

3. টাইট ইন্টিগ্রেশন: Tensor চিপটি Google-এর নিজস্ব হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার ডিজাইনের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে একীভূত করা হয়েছে, যার ফলে ব্যাটারি দক্ষতা বাড়ানো এবং পারফরম্যান্স আরও উন্নত করা সম্ভব হয়েছে।

4. উন্নত নিরাপত্তা: Tensor প্রসেসরে Titan M2 চিপ রয়েছে, যা ডিভাইসের নিরাপত্তা বাড়ায় এবং ব্যক্তিগত ডেটা রক্ষা করতে সহায়তা করে।

5. বৈচিত্রময় কোর: Tensor চিপে কাস্টমাইজড CPU কোর থাকে, যেখানে হাই-পারফরম্যান্স কোরের সাথে পাওয়ার-এফিশিয়েন্ট কোরও থাকে। ফলে এটি শক্তিশালী কর্মক্ষমতা এবং ব্যাটারি সাশ্রয়ের মধ্যে একটি ভারসাম্য বজায় রাখে।

Google Tensor-এর ব্যবহার ও প্রভাব

Google Tensor মূলত তাদের নিজস্ব হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার একীভূত করে AI-নির্ভর অভিজ্ঞতা প্রদানের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এটি গুগল পিক্সেল ফোনগুলোতে কাস্টমাইজড পারফরম্যান্স প্রদান করে এবং ক্যামেরা, রিয়েল-টাইম টাস্ক এবং কণ্ঠশক্তি নির্ভর কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স বৃদ্ধি করে।

আরো পড়ুন

মোবাইল সার্ভিসিং ফুলকোর্স- পার্ট-১ সার্ভিসিং টুল সমুহ

মোবাইল সার্ভিসিং শিখে ইনকাম করার উপায়: একটি সম্পূর্ণ গাইড




Post a Comment

Previous Post Next Post