বেশ্যা নারী (ভিডিও সহ)

 "বেশ্যা নারী" ভিডিও সহ"

কাজী নজরুল ইসলাম
(বিস্তারিত কমেন্টে)

কাজী নজরুল ইসলামের "বেশ্যা" কবিতাটি তাঁর বিদ্রোহী এবং সমাজসচেতন মনোভাবের এক অনন্য উদাহরণ। এই কবিতায় নজরুল মূলত সমাজে নারীর প্রতি বিরূপ দৃষ্টিভঙ্গি এবং তাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদ করেছেন। সমাজে "বেশ্যা" হিসেবে চিহ্নিত নারীদের জীবনের কষ্ট এবং সংগ্রামের কথা নজরুল সাহসিকতার সাথে তুলে ধরেছেন।

তিনি দেখিয়েছেন, কিভাবে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারীদের বিভিন্নভাবে শোষণ করে এবং তারপর সেই নারীকেই নিন্দা করে। কবিতার মাধ্যমে নজরুল মানুষের উপর মানুষের শোষণ এবং বিভেদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে মানবতার উপরে কোনো নির্দিষ্ট পরিচয় বা শ্রেণীর প্রভাব থাকা উচিত নয়।

"বেশ্যা" কবিতার মূল বার্তা হলো মানবতার মধ্যে সমান মর্যাদা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা। নজরুলের দৃষ্টিতে কোনো পেশার জন্য কাউকে অবজ্ঞা বা ঘৃণা করা উচিৎ নয়, বরং সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখতে হবে।

হ্যাঁ, কাজী নজরুল ইসলামের "বেশ্যা" কবিতায় স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে যে নারীদের "বেশ্যা" হতে বাধ্য করার পেছনে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। নজরুল দেখিয়েছেন যে নারীদের এই পথ বেছে নিতে হয় মূলত পুরুষতান্ত্রিক শোষণ এবং সমাজের বৈষম্যমূলক আচরণের জন্য।

পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীরা অনেক সময় দারিদ্র্য, অপমান, এবং পুরুষদের অবহেলার শিকার হয়ে বাধ্য হয়ে এই পেশা বেছে নেয়। সমাজের উচ্চবিত্ত পুরুষরা সুবিধা গ্রহণ করে, কিন্তু সেই নারীদেরই "বেশ্যা" বলে সমাজ থেকে দূরে সরিয়ে রাখে এবং ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখে। নজরুল এমন বাস্তবতাকে তুলে ধরে সমাজের দ্বিচারিতা এবং পাপ-পুণ্যের মিথ্যা ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন।

কবিতায় নজরুল মূলত এটাই বোঝাতে চেয়েছেন যে পুরুষতান্ত্রিক শোষণমূলক সমাজব্যবস্থা এবং তাদের দ্বিচারিতা নারীদের বাধ্য করে এমন পেশা গ্রহণ করতে। তিনি এর মধ্য দিয়ে পাঠকদের মনে সহানুভূতি এবং সমতা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন।


সাধুর নগরে বেশ্যা মরেছে পাপের হয়েছে শেষ
বেশ্যার লাশ হবে না দাফন এইটা সাধুর দেশ
জীবিত বেশ্যা ভোগে তো আচ্ছা মরিলেই যত দোস?
দাফন কাফন হবে না এখন সবে করে ফোস ফোস

বেশ্যা তো ছিল খাস মাল, তোদের রাতের রানী
দিনের বেলায় ভুরু কোচ কাও? মরিলে দেওনা পানি!
সাধু সুনামের ভেক ধরিয়া দেখালি দারুন খেলা
মুখোশ তোদের খুলবে অচিরে আসবে তোদের বেলা।
রাতের আধারে বেশ্যার ঘর স্বর্গ তোদের কাছে
দিনের আলোতে চিননা তাহারে? তাকাও নাকো লাজে!
চিনি চিনি ভাই সব সাধু রেই হরেক রকম সাজ
সুযোগ পেলেই দরবেশী ছেরে দেখাও উদ্দাম নাচ!
নারী আমাদের মায়ের জাতি বেশা বানালো কে?
ভদ্র সমাজে সতীর ছেলেরা খদ্দের সেজেছে?
গরীবের বৌ সস্তা জিনিস সবাই ডাকো ভাবি
সুযোগ পেলেই প্রস্তাব দাও আদিম পাপের দাবি।

স্বামী যখন মরলো ভাবির দুধের শিশু কোলে
ভদ্র দেবর সুযোগ খোঁজে সহানুভূতির ছলে,
দিনের মত দিন চলে যায় হয় না তাতে দোষ
মরা লাশের সুযোগ পেয়ে মোল্লার রোষ।
মোল্লা সাহেব নায়েবে রাসুল ফতোয়া ঝারিয়া কয়
পতিতা নারীর জানাজা কবর এই এলাকায় নয়।
শুধাই আমি ওরে মোল্লা জানাযায় যত দোষ,
বেশ্যার দান নিয়াছো ঝোলিয়ে তুমি বেটা নির্দোষ?
বেশ্যার তবু আছে পাপ বোধ নিজেকে সে ভাবে দোষী
তোমরা তো বেটা দ্বীন বেচে খাও হয়েছ খোদার খাসি।
আল্লাহর ঘর মসজিদে ও আছে বেশ্যার দান -
কলেমা পড়েছে সে ওতো তবে নামেতে মোসলমান!
বেশ্যা নারী ব্যবসা নারী পুরুষরা পুরুষ রা সব সৎ?
জানি মোল্লা খুলবে না মুখ চাকরি যাওয়ার পথ!
আর কতকাল থাকবি অমন মুখোশ ধারীর দল
আসবো এবার মশাল নিয়ে ভাঙতে তোদের কল।
সত্যর আলো জলবে যখন চিনবে তোদের সবে
লেবাশধারী মুখোশধারী মুখোশ উপরে যাবে।

বাংলাদেশি যুবক ও এক রোহিঙ্গা তরুনীকে নিয়ে লেখা "আমিরুল মোমেনিন মানিক" দারুন এক উপন্যাস লিখেছে পড়ে দেখুন ভালো লাগবেই। ৪ টি ছোট ছোট পর্বে সমাপ্ত হয়েছে।

▶️ রোহিঙ্গা তরুনী পর্ব-১

▶️ রোহিঙ্গা তরুনী পর্ব-২




🌹 ধন্যবাদ 🌹

এই ভাবে আর চালাবি কত ছল চাতুরীর খেলা
আসবে তিনি,এবার তোদের বিদায় নেবার পালা।।

বিদ্রোহী কবি""... নজরুল ইসলাম ছিলেন নিপিড়ীত, অসহায়, মানুষের কন্ঠশর,মুখোশধারী দের মুখোশ খুলে দিতে অত্যন্ত সাহসী কবি। মানবতার কবি নজরুল ইসলাম বেঁচে থাকবেন আজীবন মানুষের হৃদয়ে। সংগৃহীত

Post a Comment

Previous Post Next Post