সুখের সংসার (২) মফিজুল ইসলাম।

 সুখের সংসার (দুই)

 মফিজুল ইসলাম

সুখের সংসার (দুই)

স্ত্রী নাজিয়াকে খবরটা জানিয়ে মাসুম দেরি করলো না। অল্প সময়ের মধ্যে সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে ঢাকাগামী একটি বাসে এসে চড়ল। নিৰ্দ্দিষ্ট সময়ে বাস ছেড়ে দিল। উল্কা বেগে ছুটে চললো সম্মুখ পানে।

মাসুম খুবই মিশুক ছেলে। তদুপরি সে জানে যে, মুসলমানের সাথে হাসিমুখে কথা বলা, তাদের সাথে পরিচিত হওয়া, খোঁজ-খবর নেওয়া ইত্যাদি সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত। তাই এমনটি কখনোই হয় নি যে, তার পাশে কোনো মুসলমান বসা আছে অথচ তার সাথে সে পরিচিত হয়ে সুন্দর ও বিনম্র আচরণ করে ভাব জমিয়ে তুলে নি।


মাসুমের পাশে ছিল একজন আঠারো-উনিশ বছরের যুবক। মাসুম প্রথমে তার পরিচয় নেয়। তারপর তার সাথে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ করে। যুবকটিও মাসুমের ব্যবহারে মুগ্ধ হয়। এ দীর্ঘ সফরে একজন মনের মতো সঙ্গী পেয়ে মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে সে।

যুবকের নাম রায়হান। বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানায়। তার তিন মামা। দুই মামা বাসা নিয়ে ঢাকার মিরপুর পল্লবীতে থাকেন। আরেকজন বগুড়া শহরে ব্যবসা করেন। স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের নিয়ে সেখানেই থাকেন।

গত কয়েকদিন পূর্বে রায়হানদের এস. এস. সি পরীক্ষার রিজাল্ট বের ২রেছে। রায়হান খুব ভালো ছাত্র। সে এ প্লাস পেয়ে পাস করেছে। এ খুশির সংবাদটি আত্মীয় স্বজনদের কাছে স্বয়ং পৌঁছানোর জন্য সে আজ ৩/৪ দিন যাবত এখান থেকে সেখানে সফর করে চলেছে।

আজ রায়হানের গন্তব্য হলো, ঢাকার পল্লবী। গতকাল সে বগুড়া হতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এসেছিলো। এতক্ষণ মাসুম ও রায়হানের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা চলছিলো। এবার কথা প্রসঙ্গে রায়হান একটি শিক্ষণীয় বাস্তব ঘটনা মাসুমকে শুনালো। রায়হান বললো-

একদা আমি বগুড়া থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। ফেরার পথে নামেরা গ্রামের বাসস্ট্যান্ডে এসে দাঁড়ালাম। সেখানে কয়েকজন লোক পূর্ব থেকেই বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলো। আমি স্পোনে গিয়ে দাঁড়াতেই একটি লোক আমার দিকে এগিয়ে এলো। জিজ্ঞেস করলো-

: ভাই! কোথায় যাবেন?

: উল্লাপাড়া যাবো। আমি সহজভাবে জবাব দিলাম। এমন সময় দূর থেকে একটি কোচ আসতে দেখা গেলো। কোচটি কাছাকাছি চলে এলে লোকটি বললো-

: ভাই! এটি 'কোহিনুর সার্ভিস'। ঢাকা যাবে। আপনি যদি উল্লাপাড়ার কথা বলেন, তবে হেলপার আপনাকে কিছুতেই গাড়িতে উঠতে দেবে না। তাই আপনি ঢাকা যাওয়ার কথা বলে গাড়িতে উঠে যাবেন। পরে উল্লাপাড়ায়

গিয়ে কোনো এক কারণ দেখিয়ে নেমে পড়বেন। এতে অল্প সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারবেন।

আমি লোকটিকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনার গন্তব্য কোথায়?

লোকটি বললো, আমি শাহজাদপুর যাবো। তবে আপনাকে যে কৌশল শিখিয়ে দিয়েছি, তা আমিও অবলম্বন করবো। নচেৎ বাড়ি ফিরতে অনেক দেরি হয়ে যাবে।

আমি বললাম, ভাই! মিথ্যা বলা মহাপাপ। মিথ্যার পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ। হাদীস শরীফে আছে, সত্য মানুষকে মুক্তি দেয় আর মিথ্যা মানুষকে ধ্বংস করে। সুতরাং সামান্য একটু সুবিধা লাভের জন্য কিছুতেই মিথ্যা বলতে পারবো না। 

আর আপনাকেও আমি অনুরোধ করে বলছি, প্রয়োজনে একটু দেরি করে বাসায় ফিরুন, তবুও মিথ্যার আশ্রয় নেবেন না। ইতোমধ্যে কোহিনুর কোচটি এসে আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে গেছে। আমি হেলপারকে মিথ্যাভাবে ঢাকার কথা না বলে সত্যভাবে উল্লাপাড়ার কথাই বললাম। 

হেলপার জানালো, এটি ঢাকার কোচ, আপনাকে নেওয়া যাবে না। সুতরাং আমি পূর্বের স্থানেই অন্য বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রইলাম।


এদিকে লোকটি ঢাকার কথা বলে কোচে চড়ে বসলো। উঠার সময় আমার দিকে বাঁকা দৃষ্টিতে তাকিয়ে তাচ্ছিল্যের স্বরে বললো- আপনি তো একটা গ্রেট বোকা। মনে রাখবেন, সব জায়গায় সুফীগিরি চলে না।

আমি বললাম, ভাই! আমি বোকা আছি ভালো আছি। কিন্তু মিথ্যুক তো নই।

কোহিনুর চলে গেল। পনের বিশ মিনিট দাঁড়িয়ে রইলাম। কোন বাস এলো না। কিন্তু খোদার কুদরত বুঝা বড় দায়। একটু পর একটি ভ্যান চালক এসে বললো- কোহিনুর কোচটি মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। একজন সঙ্গে সঙ্গে মারা গেছে। পঁচিশজন আহত হয়েছে। তম্মধ্যে আট জনের অবস্থা খুবই গুরুতর।

ভ্যান চালকের কথা শুনে আমি একটি রিক্সা নিয়ে দ্রুত দুর্ঘটনার স্থানে উপস্থিত হলাম। দেখলাম, একটি লাশ কাপড় দিয়ে ঢাকা আছে। তার সমস্ত দেহ চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গেছে। মাথা ফেটে মগজ বের হয়ে এসেছে। পরণের কাপড়গুলো রক্তে রঞ্জিত। আমি মুখের কাপড়খানা সরিয়ে একটু ভালভাবে তাকাতেই চমকে উঠলাম। কেননা, এ ছিলো ঐ ব্যক্তির লাশ, যে আমাকে কিছুক্ষণ পূর্বে গ্রেট বোকা আখ্যা দিয়ে মিথ্যা কথা বলে চলে এসেছিলো।

ভাইজান! এ দৃশ্য দেখে লোকটির জন্য আমার বড় মায়া হলো। তবে সেই সাথে মিথ্যা বলার করুণ পরিণতি প্রত্যক্ষ করে হাদীসের প্রতি ভক্তি বিশ্বাস আরো বহুগুণে বেড়ে গেলো।

ভাইজান! বাড়িতে এসে যার কাছেই এ ঘটনা শুনালাম, সেই আমাকে বললো, সত্য কথা বলার কারণেই তুমি রক্ষা পেয়েছো।

মাসুম বলল- হ্যাঁ, তাদের সাথে আমিও একমত। সত্যই আপনাকে মুক্তি দিয়েছে। বাঁচিয়ে দিয়েছে এক মহা বিপদ থেকে।

❤️❤️❤️

রায়হান এবার অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করলো। সে বললো, হুজুর! আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। রীতিমতো কুরআন শরীফ পড়ি। একজন মুসলমান হিসেবে ধর্মের বিধি-বিধানগুলো মেনে চলার চেষ্টা করি। সেদিন আমি নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হচ্ছিলাম। হঠাৎ এক পুরানো বন্ধুর সাথে দেখা। বন্ধুটির নাম ইকবাল হাসান। সালাম ও কুশল বিনিময়ের পর আমি তাকে বললাম, নামাজ পড়েছিস?

সে বলল, আরে নামাজ রোজা, ইবাদত-বন্দেগী করে কী হবে? তাকদীরে যা আছে তা-ই হবে। আমার ভাগ্যে ইবাদত বন্দেগী লিখাই হয় নি। ভাগ্যে থাকলে তো ইবাদত বন্দেগী করতামই।

হুজুর! আমি স্কুলের ছাত্র। ধর্মের জ্ঞান পরিপূর্ণ না থাকার কারণে আমি তাকে সন্তোষজনক কোনো জবাব দিতে পারি নি। তবে শেষ পর্যন্ত তাকে এ কথা বলে বিদায় দিয়েছি যে, ইকবাল! তুমি অপেক্ষায় থাকো। আমি অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই হুজুরদের কাছ থেকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে তোমাকে অবহিত করবো। বিষয়টি আমার নিকটও অস্পষ্ট বিধায় তোমাকে আজ সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারলাম না। এতটুকু বলে বিদায় নিয়ে চলে এসেছি। হুজুর! আজ আপনাকে পেয়ে বড় খুশি লাগছে। অনুগ্রহ করে এ ব্যাপারে আমাকে কিছু বলুন। আমার বড় ভয় হচ্ছে, না জানি আমার বন্ধুটি তাকদীরের আশ্রয় নিয়ে আমল না করেই দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়।

মাসুম এতক্ষণ অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে রায়হানের কথা শুনছিল। রায়হানের কথা শেষ হলে মাসুম বললো-

হ্যাঁ, ভাই! আপনি একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। দুআ করুন, আল্লাহ পাক যেন আমার মুখ দিয়ে এমন কথা বের করে দেন, যদ্বারা আপনার বন্ধু এবং ঐসব লোকদের মনের খটকা দূর হয়ে যায়, যারা বলে- কপালে যা আছে, তাই তো হবে, আমল করে লাভ কি?

ভাই রায়হান! তাকদীরের কথা বলে বা তাকদীরের দোহাই দিয়ে আল্লাহ পাকের হুকুম আহকাম পালন থেকে যারা দূরে থাকতে চায় তাদের এ বক্তব্য কয়েকটি কারণে ভুল। কারণগুলো তুমি মন দিয়ে শোন। আশা করি বুঝতে পারবে।


১. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকদীরের প্রতি যেমন বিশ্বাস স্থাপন করতে বলেছেন, তেমনি শরিয়তের বিধানাবলি পূর্ণ পাবন্দীর সাথে অনুসরণ করতে বলেছেন। নির্দেশ দিয়েছেন নিষিদ্ধ বিষয়াবলি বর্জন করতে। 

এখন কথা হলো, তাকদীরের প্রতি ঈমান আনার মর্ম যদি এই হয়ে থাকে যে, এখন আর আমল করার প্রয়োজন নেই, তাহলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমল করার আদেশ দিলেন কেন? কেন বিস্তারিতভাবে শরিয়তের বিধানাবলি তুলে ধরলেন উম্মাহর সামনে? তদুপরি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশেই যখন তাকদীরকে মানা হচ্ছে, তখন অন্যান্য বিধানের ক্ষেত্রে তার হুকুমকে অমান্য করা হবে কেন? এটাই কি ঈমানদারীর পরিচয়? বিবেক কি এ কথাই বলে?

ভাই রায়হান! তাকদীর সম্পর্কে এই প্রশ্ন কোনো নতুন বিষয় নয়! হযরত ভাই রায়হান! তাকদীর সম্পর্কে এই প্রশ্ন কোনো নতুন বিষয় নয়! হযরত সাহাবায়ে কেরাম (রা.) ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এ প্রশ্ন করেছিলেন। বলেছিলেন- তাকদীরে যখন সবকিছু স্থির করা আছে তখন আর আমল করে লাভ কি হবে? আমরা বরং তাকদীরের উপর ভরসা করে বসে থাকি।

এর উত্তরে নবী করীম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা আমল করতে থাক। যাকে যে পথের জন্যে সৃষ্টি করা হয়েছে, তার জন্যে সে পথ সহজ করে দেওয়া হবে। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত: ২০)

তাক্বদীর আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকেই। তিনিই মানুষের ভাগ্য লিপিবদ্ধ করেছেন। আবার তিনিই তার নবীর মাধ্যমে ইসলামী বিধি বিধানের উপর আমল করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই অনুগত বান্দার কর্তব্য হলো, তাকদীরের প্রতিও বিশ্বাস রাখা এবং যথাযথভাবে শরিয়তের বিধানাবলিরও অনুসরণ করা। শরিয়তের বিধানাবলিকে লঙ্ঘণ করার মতলবে তাকদীরকে বাহানা হিসাবে ব্যবহার করা একান্তই বক্রতা এবং আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের প্রতি জঘন্য অভিযোগের শামিল। 

❤️❤️❤️

কেননা আল্লাহ ও রাসূলের পরিষ্কার নির্দেশ হলো, তাকদীরের প্রতি ঈমান রাখো এবং আমলও করো। আর বাহানাপন্থিরা বলছে, তাকদীরে যখন সব কিছু লিখা আছেই তখন আর আমল করার দরকার কি? একি আল্লাহ ও তদীয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মিথ্যারোপ করার শামিল নয়?

২. তাকদীর লিপিবদ্ধ হওয়ার কারণে তো কারো ভাল মন্দ কর্মের ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়া হয় নি। বরং প্রতিটি মানুষই ভাল-মন্দ যা খুশি করতে পারে। আর পরকালের শাস্তি ও পুরস্কার এই ইচ্ছাধীন কর্মের উপরই নির্ভরশীল। তাই বান্দার কর্তব্য হলো, মহান আল্লাহর বিধানাবলির প্রতি লক্ষ্য রাখা ও তদানুযায়ী আমল করতে সর্বদা সচেষ্ট থাকা।

কিন্তু সরল সহজ এই পথকে পরিহার করে আল্লাহ তা'আলার হুকুম বর্জন করা, তাকদীরের আড়াল ধরে নিজেকে বেকসুর নিষ্পাপ বলে প্রমাণিত করতে চেষ্টা করা একান্তই মূর্খতা এবং বোকামী। এই জাতীয় মানসিকতার ভয়ংকর পরিণতি হলো, এসব লোকের তওবা করারও সুযোগ হয় না।

৩. শরিয়তের বিধানাবলি থেকে আত্মরক্ষার জন্যে আশ্রয় হিসাবে তাকদীরের সাহায্য নেওয়া হয়। যারা তাকদীরের আশ্রয়ে আল্লাহ প্রদত্ত কর্তব্য থেকে পালিয়ে বেড়াতে চায়, শয়তান তাদেরকে তাকদীরের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় বার বার। অথচ এই তাকদীর আশ্রয়ীরাই পার্থিব অর্থ-বিত্ত উপার্জনের নেশায় সদা ঘর্মক্লান্ত। অথচ রিজিকও তাকদীরে লিপিবদ্ধ। রিজিক ও সম্পদের ক্ষেত্রে তাকদীরের উপর ভরসা করে ঘরে বসে থাকে না। বরং নামাজ, রোজা, হজ্ব-যাকাতের ক্ষেত্রেই কেবল বাহানা দেয়া হয় তাকদীরের। আত্ম প্রবঞ্চনার এই পথ সত্যিই বড় ধ্বংসের। সত্যিই বড় বিপদের।

❤️❤️❤️

আরো পড়ুন..

  1. সালাম, সালামুন আলাইকুম, নাকি আচ্ছালামু আলাইকুম কোনটি ঠিক? ইসলাম আমাদেরকে এর কোনটি শিখিয়েছে?

  2. ▶️ যারা নামাজে হাত বাধেনা তাদের দলীল সমুহ। 

  3. ▶️ যে কারণে ধর্মকে উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে নেয়া হারাম

  4. ▶️ মসজিদে কি দান করা উচিৎ? দানের সঠিক জায়গা কোনটি? 

 ❤️❤️❤️

মাসুমের কথা শেষ হলে রায়হান বললো, ভাইজান! তাকদীরের এ ব্যাপারটি এতদিন আমার নিকটও পরিষ্কার ছিলো না। অনুরূপ প্রশ্ন আমার

বরং নামাজ, রোজা, হজ্ব-যাকাতের ক্ষেত্রেই কেবল বাহানা দেয়া হয় তাকদীরের। আত্ম প্রবঞ্চনার এই পথ সত্যিই বড় ধ্বংসের। সত্যিই বড় বিপদের।

মাসুমের কথা শেষ হলে রায়হান বললো, ভাইজান! তাকদীরের এ ব্যাপারটি এতদিন আমার নিকটও পরিষ্কার ছিলো না। অনুরূপ প্রশ্ন আমার অন্তরেও জাগ্রতা হতো। কিন্তু আপনার বক্তব্য শুনে বিষয়টি অনেকটা পরিষ্কার হয়ে গেছে। এখন আমার মনে এ ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন নেই।

: ভাই! তাকদীরের ব্যাপারটি একটু জটিলই বটে। রহস্যে ঘেরা এ বিষয়টিতে কিছুটা অস্পষ্টতা থাকতেই পারে। তবে জ্ঞানের পরিচয় হবে এটাই, এ ব্যাপারে চুলচেরা বিশ্লেষণে না গিয়ে আল্লাহ এবং তদীয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ অনুযায়ী আমল করে যাওয়া।

: হ্যাঁ, আপনি একশ ভাগ সত্য ও সঠিক কথা বলেছেন। দুআ করবেন, এভাবে আমল করেই যেন দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে পারি।

এভাবে আরো অনেক কথাবার্তার মধ্য দিয়ে তারা ঢাকা এসে পৌঁছে। গাড়ী থেকে নামার পর এবার পৃথক হওয়ার পালা। 

বাংলাদেশি যুবক ও এক রোহিঙ্গা তরুনীকে নিয়ে লেখা "আমিরুল মোমেনিন মানিক" দারুন এক উপন্যাস লিখেছে পড়ে দেখুন ভালো লাগবেই। ৪ টি ছোট ছোট পর্বে সমাপ্ত হয়েছে।



▶️ রোহিঙ্গা তরুনী পর্ব-১



▶️ রোহিঙ্গা তরুনী পর্ব-২



▶️ রোহিঙ্গা তরুনী পর্ব-৩



▶️ রোহিঙ্গা তরুনী পর্ব-৪


🌹 ধন্যবাদ 🌹

আসলে এ অল্প সময়ের দেখা সাক্ষাত ও কথা বার্তায় তাদের দুজনের মধ্যে এক গভীর হৃদ্যতার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো। 

তাই বিদায় মুহূর্তে উভয়ের চোখেই পানি এসে গেলো। একটি ভিজিটিং কার্ড এগিয়ে দিতে দিতে মাসুম বললো, আল্লাহ পাক যেন আবার আমাদের সাক্ষাত ঘটান। 'তাই যেন হয় আস্ সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ' বলে রায়হান তার আপন গন্তব্যের দিকে পা বাড়ালো।

Post a Comment

أحدث أقدم